আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি; আমি কি ভুলিতে পারি...হৃদয় আলোড়িত এ গান এখন হাজার হাজার মানুষের মুখে মুখে ফেরে প্রভাতফেরির লগ্নে। শিমুল ফোটার দিনে কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে নগ্ন পায়ে জনতা যোগ দেয় প্রভাতফেরির মিছিলে। সারিবদ্ধভাবে ধীর লয়ে চলতে থাকে শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে। ফুল আর অশ্রুতে ভিজিয়ে দেয় শহীদ মিনার, ভাষা আন্দোলনের সৌধ। রাতের অকার ভেদ করে নগরীর মানুষ নগ্ন পায়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে বেরিয়ে পড়ে ঘর ছেড়ে। সবারই গন্তব্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। হ্যাঁ, প্রভাতফেরির কথা বলছি। শিশির ভেজা দূর্বাঘাস কিংবা শিশির-স্নাত সড়কের কালো পিচের ওপর দিয়ে সাতসকালে হাঁটতে কী দারুণ অনুভূতি-তা কি ভাষায় প্রকাশ করা যায়। আমাদের এ শ্রদ্ধা নিবেদনে থাকে না কোনো ভণ্ডামি কিংবা কৃত্রিমতা। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা যেসব শহীদ আমাদের মায়ের ভাষা রায় জীবন দিয়েছেন তাঁদের স্মরণে, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা কিছুটা সময় ব্যয় করব এটা তো স্বাভাবিক। আমরা তো এতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারি না!
সরকারের প্রতি ক্ষোভ আর ঘৃণা প্রকাশের সেই পন্হা, নগ্ন পায়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নেওয়ার সেই রীতি আজও বহমান। এই চেতনা ও রীতিই মধ্যে বাঙালী জাতি বহন করে চলেছে একুশের ইতিহাস, মাথা না নোয়ানোর প্রতিজ্ঞা। একুশের আগমনে অম্লান সেই স্মৃতি সংঘবদ্ধ ও সংগঠিত হয়ে রূপ নেয় প্রভাতফেরিতে। প্রকৃতিও অংশ নেয় সেই আয়োজনে।
আমরা চাই এবার একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হোক প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি পাড়ায়। সে লক্ষ্যে এখনি আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
Wednesday, February 11, 2009
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরি
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment